অনলাইন ডেস্ক: পারস্পরিক যোগসাজশে সফটওয়্যার ব্যবসার ফাঁদে ফেলে জনতা ব্যাংক থেকে নেওয়া হয়েছে কোটি কোটি টাকা। পাচার হয়েছে বিদেশে। বিষয়টি জানতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাখ্যা চেয়েছে। কিন্তু সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি জনতা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ব্যাংক পরিচালনায় অন্যতম কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যারকে কেন্দ্র করেই যত বিপত্তি ঘটে। ঐ সফটওয়্যারের আপগ্রেড ভার্সন না করা সত্ত্বেও জনতা ব্যাংক পুনরায় তাদের সঙ্গে চুক্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। জানা যায়, টেন্ডার ছাড়াই রিলাইসেন্সিংয়ে প্রায় শত কোটি টাকা খরচ করে জনতা ব্যাংক। পূর্ব অভিজ্ঞতার বিষয়টিও গুরুত্ব পায়নি। জনতা ব্যাংক এমন একটি কোম্পানির কাছ থেকে সফটওয়্যার কেনা ও সার্ভিসিংয়ের চুক্তি করে, যার কোনো ট্র্যাক রেকর্ড নেই। কোম্পানিটির একই নামে যুক্তরাজ্যে টাকা পাঠায় জনতা ব্যাংক। কিন্তু বিদেশে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রণীত গাইডলাইন মানা হয়নি।
নাজিহার সোর্সিং লিমিটেড ইউকের কাছে পাঠানো টাকার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জনতা ব্যাংকের কাছে ব্যাখ্যা চায়। সে ব্যাখ্যারও সদুত্তর দিতে পারেনি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। অনেকটা আড়ালে চলে গিয়েছিল বিষয়টি। সম্প্রতি পি কে হালদার ভারতে গ্রেফতার হওয়ার পর নতুন করে ব্যাংক পাড়ায় আলোচনায় চলে আসে সফটওয়্যারের আড়ালে টাকা পাচার ও রমরমা ব্যবসার বিষয়টি। এর আগে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যার নিয়েও কেলেংকারির ঘটনা ফাঁস হয়। টেমিনসের স্থানীয় প্রতিনিধি ফ্লোরা টেলিকমের সঙ্গে যোগসাজশে মানি লন্ডারিং হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক তদন্তে প্রমাণিত হয়। বিষয়টি আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। অগ্রণী ব্যাংকের এ সংক্রান্ত জটিলতায় মহামান্য হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, সফটওয়ার সার্ভিসের জন্য ফ্লোরা টেলিকম দ্বিগুণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে এবং বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে বিদেশে অর্থ পাঠানো হয়নি।
অগ্রণী ব্যাংকের পর এখন জনতা ব্যাংকেও প্রায় একই রকম ঘটনার কথা জানিয়েছে সূত্রগুলো। দ্বিগুণ মূল্যে কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যারের পুনঃলাইসেন্সের জন্য জনতা ব্যাংকের বেলায়ও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ও এর মূলে আলোচিত সেই পি কে হালদার রয়েছেন। নাজিহার সোর্সিং লি. ইউকে হচ্ছে মূলত পি কে হালদারের প্রতিষ্ঠান। বেনামে তিনি আরো কিছু প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় রয়েছেন। নাজিহার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিল্লুর রহমান জুয়েল। তিনি আবার ডিএনজেড আইটিরও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এখানে তার সঙ্গে পরিচালক রয়েছেন নাজমুজ্জামান। আবার হালটেকের পরিচালকও নাজমুজ্জামান। যেখানে পি কে হালদার ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তবে এখানে প্রশান্ত হালদারের বদলে প্রীতিশ কান্তি হালদারের নাম ব্যবহৃত হয়েছে বলে সূত্রটি জানায়।
মতিহার বার্তা/এমআরটি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.